মৃত্যু একজন মানুষের জীবনের মন্দ সমাপ্তির অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, তার মধ্যে একটি হল গুনাহের কাজে অব্যাহত থাকা। একজন ব্যক্তি খুব ছোট কোন গুনাহ করতে পারে, কিন্তু আলিমগণ বলে থাকেন, ছোট গুনাহ অনবরত করতে থাকলে তা বড় গুনাহতে পরিণত হয়। অতএব যখন আপনি একটা ছোট গুনাহ বারে বারে করতে থাকবেন, এটাকে ধরা হবে গুরুতর গুনাহ হিসেবে। আল-যাহাবী তাঁর ‘আল-কাবাইর’ গ্রন্থে মানুষের জীবনের মন্দ সমাপ্তি সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এক ব্যক্তির নেশা ছিল দাবা খেলা, মৃত্যুর সময় যখন তাকে বলা হল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে, সে, তা বলতে পারল না। আর মৃত্যুর ঠিক পূর্ব মুহূর্তে সে বলতে থাকল, ‘চেক দোস্ত! চেক দোস্ত!’ — সে ভাবছিল তার দাবার কথা, আর এভাবেই সে মারা গেল। তিনি আরেক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন যাকে মৃত্যুর সময় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে বলা হলে সে বলতে থাকে, ‘আমাকে একটা বোতল দাও, একটা গ্লাস দাও, আমি মদ খাবো।’ যেহেতু সে ছিল মাদকাসক্ত, শেষ মুহূর্তে এসেও তার মাথায় মদের কথা ঘুরছিল। আর-রাবী বিন সাবুরা একটা ঘটনা বলেন, তিনি এক লোকের মৃত্যুর সময় উপস্থিত ছিলেন, সে ছিল অ্যাকাউন্টেন্ট, তাকে সবসময় হিসাব-নিকাশ আর গণনার কাজ করতে হতো। মৃত্যুর সময় সবাই তাকে কালেমা পড়তে বললো, কিন্তু, সে বলতে শুরু করল, ‘১০, ১১, ১২…’ এরপর মৃত্যু পর্যন্ত সে এভাবেই নম্বর গুনতে থাকল। ইবন আল কায়্যিম একটা কাহিনী বর্ণনা করেন যেখানে এক ব্যক্তিকে মারা যাওয়ার সময় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে বলা হলে সে বলল, ‘আমি পারছি না’ অথচ তার জিহবায় কোনো প্রকার সমস্যা ছিল না। সে প্রাঞ্জলভাবে কথা বলতে পারত, কিন্তু সে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে পারল না। আল্লাহ তা‘আলা তাকে এটা বলার তওফিক দিলেন না কেননা তার জীবনে এটা বলার মত কোনো রেকর্ড ছিল না। আমরা সবসময় ভাবছি এই করবো, সেই করবো, সারাজীবন গুনাহ করে যাবো আর মৃত্যুর ঠিক ৫ মিনিট আগে আমি বলব ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ আর পার পেয়ে যাবো – না, এটা এতো সহজ না। আপনি যেসব কাজ করে অভ্যস্ত সেসব কাজ করতেই করতেই আপনার মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কখনোই ভাববেন না আপনি আল্লাহ কে বোকা বানাবেন। আপনার মনে আল্লাহর ভয় থাকা উচিত। যে ব্যক্তি আল্লাহর আযাব থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। সিরিজটি শুনতে ক্লিক করুন - http://bit.ly/2fur4G8
পরকালের পথে যাত্রা | মৃত্যু
মৃত্যু আমরা, মানব জাতি দুনিয়াতে এমন একটা ধারণা নিয়ে বেঁচে থাকি যে, এই দুনিয়াটা আমাদের। এটাই আমাদের থাকার স্থান, ঘরবাড়ি, এখানে আছি, থাকব, যেন এটা আমাদের চির আবাসস্থল। কিন্তু যে বাস্তবতা আমরা জানি না, বা জানতে চাই না, যে, আমরা এক ট্রেনে ভ্রমণ করছি, যে ট্রেনটা একটা একটা করে স্টেশন পার হয়ে সর্বশেষ একটি গন্তব্যের দিকে যাচ্ছে। আর এই দুনিয়ার জীবন হচ্ছে এমনই একটা স্টেশনের শুরু মাত্র। কিন্তু আমরা এই দুনিয়ার নই, বা দুনিয়াটাও আমাদের নয়। আমাদের হাতে যেন একটি টিকেট আছে, যেটার তিনটি অংশ আছে। আমরা মায়ের গর্ভে নয় মাস অবস্থান করি, তারপর সে টিকেটের একটা অংশ ছিড়ে ফেলা হয়। এরপর আমরা এই দুনিয়ার জীবনে প্রবেশ করি, আমাদের নতুন স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু হয়, আর এরপর যখন আমরা মারা যাই, তখন টিকেটের দ্বিতীয় অংশটুকু ছিড়ে ফেলা হয়। আমাদের হাতে থেকে যায় টিকেটের শেষ অংশটুকু, জান্নাত বা জাহান্নামের প্রবেশ করার সাথে শেষ অংশটুকুও ছিড়ে ফেলা হবে, আর সেটাই হবে আমাদের চূড়ান্ত গন্তব্যস্থল। আমরা, এই দুনিয়ার চিরস্থায়ী বাসিন্দা না, এই দুনিয়া কেবলই আমাদের দীর্ঘ সফরের একটা ক্ষুদ্র অংশ মাত্র, তাই রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এই দুনিয়াতে এমনভাবে বেঁচে থাক যেন তুমি একজন মুসাফির।’ তিনি দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন এই বলে, ‘ধরো, একটা মানুষ মরুভূমির পথ ধরে যাচ্ছে, এবং সে দেখল একটা গাছ, সেটা দেখে তার ছায়ার নিচে বসল, বিশ্রাম নিল এবং আবার তার অসম্পূর্ণ সফর সম্পন্ন করতে পুনরায় চলতে শুরু করল — এটাই হল দুনিয়া।’ আমরা গাছটার নিচে অল্প কয়টা মূহূর্ত ব্যয় করছি এবং এরপর আবার আগের যাত্রা। সময়ের এই পথ চলা, আমাদের জীবনের, আমাদের অস্তিত্বের ক্ষয় ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রতিটি সেকেন্ডের সাথে সাথে আমাদের অস্তিত্ব ক্রমেই নিঃশেষ হচ্ছে। এই বাস্তবতা আমাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে, যে, আমরা এখানকার কেউ নেই, আর তাই আমাদের প্রস্তুত হতে হবে মৃত্যুর জন্য। সিরিজটি শুনতে ক্লিক করুন - http://bit.ly/2fur4G8
রুহের যাত্রা ‘মৃত্যু তোমায় স্বাগতম! আমি তোমার জন্য কতোদিন ধরে অপেক্ষা করে আছি, আমাকে দেওয়া আল্লাহর ওয়াদার জন্য অপেক্ষা করে আছি। মৃত্যু তোমায় স্বাগতম! হে মৃত্যু, মনে কোরো না, আমি এই দুনিয়াতে ভালোবাসার টানে থাকতে চেয়েছি, না, আমি এখানে থাকতে চেয়েছি যেন দীর্ঘ গরমের দিনগুলোতে রোজা রাখতে পারি, যেন শীতের দীর্ঘ রাত্রিগুলো সালাত পড়ে কাটাতে পারি। এখন আমার যাওয়ার সময় এসেছে, আমি তোমাকে স্বাগত জানাই। নাও আমার আত্মাকে।’ — মুয়ায বিন জাবাল, জীবনের অন্তিম মুহুর্তে।
কিয়ামতের ছোট লক্ষণ ০৮-১৮ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, শান্তির প্রসার ঘটবে, আবার এও আছে যে ফিতনার প্রসার ঘটবে। এবং এ দু’টো একই হাদীসে বলা আছে, অতঃএব এগুলো অবশ্যই ভিন্ন সময়ে ঘটবে। যখনই ইসলাম থাকবে, তখন শান্তি বজায় থাকবে। আর যখন মানুষের উপরে ধর্মের প্রভাব কমে যাবে, দীন মানার প্রবণতা কমে যাবে, তখন দুর্নীতি ও ফিতনা বৃদ্ধি পাবে, হত্যা বৃদ্ধি পাবে। রাসূলুল্লাহ সা. এর কিছু হাদীসে এই শান্তি প্রসার সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। যেমন তাদের একটি হলো, রাসূলুল্লাহ সা. কাবায় হেলান দিয়ে বসেছিলেন। খাব্বাব রা. রাসূলুল্লাহ সা. এর কাছে আসলেন এবং মক্কায়, ইসলামের প্রাথমিক বছর গুলোতে সাহাবারা যে কঠিন সময়ের মোকাবেলা করছেন সে ব্যাপারে অভিযোগ করলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সা. এর কাছে ফরিয়াদ জানালেন, ‘আপনি কি আমাদের জন্য দোয়া করবেন না ?’ রাসূলুল্লাহ সা. সোজা হয়ে বসলেন এবং তার চেহারাতে স্পষ্টত রাগ দেখা যাচ্ছিলো। রাসূলুল্লাহ সা. এর তখন বললেন, ‘তোমাদের পূর্ববর্তীদের মাঝে কিছু লোককে ধরে আনা হতো, জমিতে গর্ত খোঁড়া হতো, সেখানে ঢুকাবার পর একটি করাত আনা হতো, তাদেরকে সেই করাত দিয়ে দু’টুকরা করা হতো, তবু তারা তাদের দ্বীন ছাড়তো না। তারপর তারা আরেকজন মুসলিম কে ধরে নিয়ে আসত এবং লোহার চিরুনি দিয়ে আঁচড়াতে থাকত, যতক্ষণ না তাদের হাড় থেকে মাংস আলাদা হয়ে যেত। কিন্তু তারপরেও সে তার দ্বীন ছাড়তো না। কিন্তু তোমরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছো।’ যদিও খাব্বাব ও অন্যান্য সাহাবারা রা. বিভিন্ন প্রকার অত্যাচারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তার পরেও রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন ‘তোমাদের ধৈর্য ধরতে হবে, ব্যতিব্যস্ত হয়ো না, আল্লাহ প্রদত্ত বিজয় আসবেই।
আস-সিদ্দীক্ব | আবু বকর (রা) এর চারিত্রিক শ্রেষ্ঠত্ব
১। - ঘরে কী রেখে এসেছ? - আল্লাহ ও তার রাসূলকে রেখে এসেছি। ২। “যারা মুহাম্মাদের পূজা করত, তারা জেনে রাখুক মুহাম্মাদ মৃত্যুবরণ করেছেন। আর যারা আল্লাহর ইবাদত করে, তারা জেনে নিক, আল্লাহ্ চিরঞ্জীব, তাঁর কোনো মৃত্যু নেই।” কিছু বাক্য এমন যা কিয়ামত পর্যন্ত মানুষকে নাড়া দেবে। আর কিছু মানুষ এমন যারা চরম মুহূর্তে এগিয়ে এসে আস্থার প্রতীক হয়ে ভাস্বর হয়ে আছেন ইতিহাসের পাতায় আর মুসলিমদের হৃদয়ে। নবীদের পর এই মানুষদের তালিকায় সবার উপরে যিনি থাকবেন তিনি এই উদ্ধৃতিটিসহ মুসলিম জাতির হাজারো অনুপ্রেরণার উৎস, আমাদের প্রথম খলীফা, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু। তাঁর জীবনের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে সাধারণের মাঝে অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প, মানবের মাঝে অতিমানব হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা আর কোমলতার মাঝে চারিত্রিক দৃঢ়তার অসামান্য উদাহরণ। তিনি ছিলেন নবীজির (সা) আস্থাভাজন, হিজরতের সফরসঙ্গী হওয়ার বিরল সুযোগের অধিকারী একমাত্র সাহাবী। যারা ইসলামকে জীবনে ধারণ করতে চায়, ইসলামের জন্য জীবন দিতে চায়, তাদের করণীয় যারা এই পথ পাড়ি দিয়েছেন তাদেরকে জানা, হৃদয়ে ধারণ করা। এই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় রেইনড্রপস নিয়ে আসছে, প্রিয় সাহাবি ও খলিফা আবু বকর (রা) এর জীবনীর অডিও সিরিজ, আস-সিদ্দীক্ব। ------------------------------ ------------------------------ আজকে প্রকাশিত হচ্ছে এই সিরিজের ১ম পর্ব। এই পর্বের প্রথম দিকে আলোচিত হয়েছে ভালো কাজে সাহাবীদের পারস্পরিক প্রতিযোগিতা ও আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর অগ্রগামীতা, বিভিন্ন ঘটনায় আবু বকর রা.-এর শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে। এরপর রয়েছে আবু বকর রা.-এর নাম ও উপাধি, জন্ম, দৈহিক গড়ন, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। সাহাবীদের জীবনযাত্রার ধরণ, তাদের বৈচিত্র্যময় ব্যক্তিত্ব, নবী-রাসূলদের পর পরবর্তী প্রজন্মের মানুষদের মধ্য থেকে কেন সাহাবীদের জীবনী আগে জানব, তাদের ব্যক্তিত্ব ও ঘটনা কিভাবে আমাদের আত্মপরিচয় গঠন করতে পারে, তাদের যুগ কিভাবে ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছে, সমকালীন প্রেক্ষাপটে সাহাবীদের যুগের গুরুত্ব ও প্রভাব ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ। উল্লেখ্য, যদিওবা পৃথক শিরোনামে চিহ্নিত করা নেই, তবুও আবু বকর রা.-এর জীবনী আলোচনায় প্রাসঙ্গিকভাবে অন্যান্য সাহাবীদের জীবনের উল্লেখযোগ্য অংশও উঠে আসবে ইনশাআল্লাহ। ডাউনলোড করুনঃ অডিওম্যাক - https://bit.ly/2I4WctFহিয়ারদিস - https://bit.ly/32EC7nNআর্কাইভ - https://bit.ly/38cGrvB এই সিরিজের অন্যান্য পর্বগুলোর লিংক - https://bit.ly/2I8OKxSরেইনড্রপসের অন্যান্য সিরিজের লিংক - https://bit.ly/2TU0mbNরেইনড্রপসের লেকচারগুলো লো-কোয়ালিটি ভার্সনে পাবেন Ilmdrive এর ওয়েবসাইটে - https://bit.ly/2HczJgN আবু বকর আস সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহুর জীবনী। পর্ব ১ম - তাঁর চারিত্রিক শ্রেষ্ঠত্ব। Core Tag: Biography of Abu Bakr (ra) Seerah of Abu Bakr (ra)
অনেক শব্দ কিংবা অনেক মনের ভাব আছে যা এক ভাষায় সহজে প্রকাশ করা গেলেও অন্য ভাষায় যুতসই শব্দ খুঁজে পেতে কষ্ট হয়। ইংরেজিতে এমন একটা শব্দ হচ্ছে Watershed। একটা নিরামিষ বাংলা হতে পারে সন্ধিক্ষণ, কিংবা মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া মুহূর্ত। ইসলামি ইতিহাসের অনেক Watershed moment এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে মানুষটি, তিনি হলেন আল-ফারুক, উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু। ইতিহাসে গোপন দাওয়াত থেকে প্রকাশ্য দাওয়াতের শুরু চিহ্নিত করে আছে আমিরুল মুমিনীন উমারের ইসলাম কবুল। যার মতামতের সাথে দুইদুইবার ওয়াহীর আদেশ মিলে গেছে তিনি উমার। জেরুজালেম বিজয় যার হাত ধরে তিনি উমার। আজ জেরুজালেম শত্রুর হাতের মুঠোয়। প্রকাশ্যে দাওয়াত তো দূরের কথা গোপন দাওয়াতের অভিযোগেও মুসলিমদের উপর জেল জুলুম হত্যা হয় নির্বিচারে। যে উমারকে শয়তানও ভয় পেত আজ দুর্বল থেকে দুর্বলতর প্রতিপক্ষ ছড়ি ঘুরায় মুসলিমদের উপর। এই জিল্লত, এই অধঃপতন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমাদের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত উমারের সেই বাণী। "আমরা ছিলাম নিকৃষ্ট এক জাতি। আল্লাহ ইসলামের মাধ্যমে আমাদের সম্মানিত করেছেন। আমরা যদি ফের জাহিলিয়্যাতে সম্মান খুঁজতে যাই তো আল্লাহ আমাদের অপদস্থ করবেন।" জাহিলিয়্যাত ভুলে আবার ইসলামে ফিরতে আমাদের জানতে হবে উমারের আদর্শ, উপলব্ধি করতে হবে উমারের পরিবর্তন, বলীয়ান হতে হবে উমারের বীরত্বে, মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে উমারের যুহদ, মনোবল আর আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ভালোবাসায়। উমারের জীবনের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। আছে পথহারার জন্য ঘুরে দাঁড়াবার উদ্যম। আছে ভীরুর জন্য সাহসের সাথে ইসলামকে ধারণ করার বারুদ। আছে গাফেল আর অহংকারীর জন্য আল্লাহর দিকে বিনয়ের সাথে নুয়ে পড়ার দাওয়াই। রেইনড্রপস নিয়ে আসছে খলিফাতুল মুসলিমীন উমার ইবনুল খাত্তাবের জীবনীর অডিও সিরিজ আল-ফারুক্ব। শুনুন, শোনান, ধারণ করুন, যাপন করুন। উম্মতের আনাচে কানাচে বেরিয়ে আসুক হাজারো উমার। ------------------------------------ ------------------------------------ আজকে প্রকাশিত হচ্ছে আল ফারুক সিরিজের ১ম পর্ব। এ পর্বে আলোচনা করা হবে উমার ইবন আল-খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর ব্যক্তিত্ব ও বংশপরিচয় নিয়ে। ডাউনলোড লিংক- অডিওম্যাক - https://tinyurl.com/yxpremt3হিয়ারদিস - https://tinyurl.com/y4kdxehkআর্কাইভ - https://tinyurl.com/y6z74rwq
হুট করে যদি রাস্তায় আপনাকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করি, পৃথিবীর কোণায় কোণায় ছড়িয়ে পড়েছে এমন একটি সমস্যার নাম বলুন! আপনি হয়তো চট করে বলবেন, করোনা ভাইরাস। কিন্তু করোনা তো এল এই সেদিন আর কমেও এসেছে খুব দ্রুতই। একটু থেমে ভালো করে ভাবুন তো, কোন ব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে আরও গভীরে, আরও সুদূরে? উত্তরটা হলো অশ্লীলতা। এ ব্যাধি এতটাই সর্বব্যাপি ঘরের দুয়ার দিয়েও রেহাই পাবেন না। নগ্নতা আজ সাহসিকতা। লজ্জা আজ পশ্চাদপদতা। নারীরা আজ 'সাহসী' দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত। 'পুরুষের আবার লজ্জা কী!' - তো প্রবাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই জাহেলিয়াতের রাজত্বে এই উম্মতের রাহবার কে? এর উত্তর দিয়ে গেছেন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা), "লজ্জা ঈমানের অঙ্গ, আর আমার উম্মতের মধ্যে সবচে' লজ্জাশীল হচ্ছে উসমান" রাদিয়াল্লাহু আনহু। চিন্তা করুন, এই দ্বীন কতটা বিশুদ্ধ যে এর লজ্জাশীলতার উদাহরণ একজন পুরুষ। একজন ধনকুবের আরব যিনি চাইলেই হারিয়ে যেতে পারতেন অশ্লীতার উন্মত্ততায়। এই সর্বগ্রাসী ব্যাধির প্রতিষেধক পেতে আমাদেরকে ফিরে যেতে উসমানের কাছে। মুসলিম জাহানের খলিফা, মুসলিমদের নৌবাহিনীর জনক, উসমান 'গনী' হয়ে উঠুক আপনার, আমার এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। অশ্লীলতার বিষে কলুষিত অন্তরগুলোর আরোগ্যের দাওয়াই, রাসূলুল্লাহর দুই কন্যার জামাতা, উসমান বিন আফফান এর জীবনীর ধারাবাহিক অডিও সিরিজ 'যুন নূরাইন' আপনাদের কাছে নিয়ে আসছে রেইনড্রপ্স। শুনুন, শোনান। অন্তরে গেঁথে নিয়ে, আমলে প্রতিফলিত করুন। অশ্লীলতার ভ্যাকসিন এখানেই।
“অতএব, আপনি বিবৃতকরুন এসব কাহিনী, যাতে তারা চিন্তা করে।” [সুরা আল আরাফ ১৭৬] নবীদের মধ্যে আমরা যাদের নাম জানি তারা হলেম আদম, শিস, ইদরিস, নূহ, হুদ, সালেহ, ইবরাহীম, ইসমাইল, ইসহাক, লুত, ইয়াকুব, ইউসুফ, শু’আয়েব, আইয়ুব, যুল-কিফল, মুসা, হারুন, ইঊসা বিন নুন, আল ইয়াসা, ইলিয়াস, দাঊদ, সোলায়মান, ইঊনুস, জাকারিয়া, ইয়াহহিয়া, ঈসা, মুহাম্মাদ (সাঃ)। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা বলছেন, “এরা এমন ছিল, যাদেরকে আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেছিলেন। অতএব, আপনিও তাদের পথ অনুসরণ করুন।” [সূরা আন’আম ৬:৯০] “আমরা তোমার কাছে এই কুরআন প্রত্যাদেশের দ্বারা তোমার নিকট শ্রেষ্ঠ কাহিনী বর্ণনা করছি। আর অবশ্যই এর আগে তুমি তো ছিলে অনবহিতদের অন্তর্ভূক্ত।” [সুরা ইউসুফ ১২:৩] অর্থাৎ, এই কাহিনীগুলো হল শ্রেষ্ঠ সব কাহিনীগুলো যাতে আছে সৃষ্টিদের সেরাদের নিয়ে কথা। আর এইসব কাহিনী নিয়েই আমাদের অডিও সিরিজ পথিকৃৎদের পদচিহ্ন: নবীদের জীবন।
এই সিরিজের অডিওগুলো mp3 ফরম্যাটে ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন। অডিওম্যাক - https://bit.ly/2LPAb46 (মোবাইলে audiomack অ্যাপ দিয়ে ডাউনলোড করতে হবে) হিয়ারদিস - https://bit.ly/2LSVmSE আর্কাইভ - https://bit.ly/2A1Aaasগুগল ড্রাইভ - https://bit.ly/2VpRmyP কোন সন্দেহ নেই, মুসলিম উম্মাহ বর্তমানে একটি ক্রান্তি ও চ্যালেঞ্জের সময় অতিক্রম করছে। এই কঠিন পরীক্ষায় টিকে থাকতে ও উত্তীর্ণ হবার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের কাছে বারবার বর্ণনা করেছেন অমূল্য কিছু কাহিনী, নবীদের জীবন ও তাঁদের আদর্শ। কুরআনের অর্ধেকটা জুড়ে পূর্ববর্তী নবীদের কাহিনী বর্ণিত হলেও আমরা অনেকেই এই ব্যাপারে নিতান্তই গাফেল, আর তাই এই লেকচার সিরিজ। কেন আমরা নবীদের কাহিনী জানব? প্রথমত, দিকনির্দেশনা পেতে। আম্বিয়াগণ আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা, তাঁদেরকে তিনি সরলপথে পরিচালিত করেছেন। তাই, কোন তন্ত্র-মন্ত্র নয় বরং নবীদের পদচিহ্ন অনুসরণ করার মাধ্যমে আমরা সাফল্যের দেখা পাবো। দ্বিতীয়ত, তাঁদের সাহসিকতা, বীরত্ব আর সংগ্রামী কাহিনী, ইনশাআল্লাহ আমাদেরকেও বর্তমানের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রেরণা যোগাবে ও সাহস সঞ্চার করবে। তৃতীয়ত, আমরা দেখব ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে আর সকল বাঁধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আম্বিয়াগণকে আল্লাহ তার শত্রুদের বিরুদ্ধে অভাবনীয় সব উপায়ে সাহায্য করেন এবং বিজয় দান করেন। ১ম পর্বের শুরু সৃষ্টির শুরু দিয়ে, এরপর ধারাবাহিক ভাবে আলোচিত হয়েছে আম্বিয়াদের জীবনী জানার গুরুত্ব, মহান আল্লাহ তা’আলার মানব জাতি সৃষ্টির কারণ, সৃষ্টির সময়ে ফেরেশতাদের বক্তব্য ও আল্লাহর প্রত্যুত্তর ইত্যাদি। এছাড়াও যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে: • আদম আ. এর সাথে ইবলিসের শত্রুতা। • আদম আ. এর প্রথম কথা। • আদম আ. কে আল্লাহর শিক্ষাদান। • সঙ্গিনী হাওয়া আ. এর সৃষ্টি ও তাদের জান্নাতে বসবাস। • ইবলিসের কুমন্ত্রণা, আদম আ. ও হাওয়া আ. এর ভুল, মহান আল্লাহ কর্তৃক আদম আ. কে দু’আ শিক্ষা ও সবশেষে আমাদের জন্য যে শিক্ষা রয়েছে।