সূরা ইখলাস
সূরা ইখলাস
কুরআন |
---|
ধারাবাহিক নিবন্ধশ্রেণীর অংশ |
- [৪] বলুন (হে নবি),আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়;
- আল্লাহ অমুখাপেক্ষী;
- তিনি কাউকে জন্ম দেননি,কেউ তাঁকে জন্ম দেননি;
- আর কেউই তার সমতুল্য নয়।[৫]
সার সংক্ষেপ[সম্পাদনা]
আবৃত্তি ও স্মৃতিতে সংরক্ষণ[সম্পাদনা]
অবতরণের পটভূমি[সম্পাদনা]
পাণ্ডলিপি ও অনুবাদ[সম্পাদনা]
পাঠ ও লিপি[সম্পাদনা]
বাংলা অনুবাদ[সম্পাদনা]
1 বলুন ( হে নবি ), তিনি আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় ,
2 তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন ,
3 তিনি কাউকে জন্ম দেননি ; কেউ তাঁকে জন্ম দেননি ,
4 আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই ।
অনুবাদ:মীর ফজলে আলী
ব্যাখ্যা[সম্পাদনা]
কুরআন ১১২:১-২ স্রষ্টার একত্ববাদ[সম্পাদনা]
সূরা আল ইখলাসে চারটি আয়াত রয়েছে:
এ বিষয়ে "তাফসির ইবনে কাসির" এ বলা হয়েছে,
হাদিস[সম্পাদনা]
হাদিস অনুসারে এ সূরাটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সূরা ইখলাস কুরআনের একটি সম্মানীত অংশ:
- আবু সাইদ আল খুদরি বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি অন্য একজনকে (নামাযে) আবৃত্তি করতে শুনল: ‘বলুন (হে মুহাম্মাদ): তিনিই আল্লাহ, তিনিই এক।’ (১১২.১) এবং তিনি এটি বারবার আবৃত্তি করলেন। যখন সকাল হয়ে গেল, তখন তিনি নবীজির নিকটে গেলেন এবং তাকে সে সম্পর্কে অবহিত করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "তাঁর কসম যাঁর হাতে আমার জীবন, এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।[১২][১৩]
- ইয়াহিয়া, ইবনে শিহাব থেকে বর্ণনা করেছেন যে হুমায়দ ইবনে আবদ-রহমান ইবনে আওফ তাকে বলেছিলেন, সূরাতুল ইখলাস (সূরা ১১২) কোরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান এবং সূরাতুল মুলক, (সূরা ৬৭) এর পাঠকারীর পক্ষে সুপারিশ করে।[১৪]
- ‘আয়েশা কর্তৃক বর্ণিত: নবী এক ব্যক্তির অধীনে একদল সেনাবাহিনী প্রেরণ করেছিলেন, যিনি তাঁর সাহাবীদের সাথে নামাযে ইমামতি করতেন এবং (সূরা ১১২) দিয়ে তাঁর তেলাওয়াত শেষ করতেন: 'বলুন (ও মুহাম্মদ): "তিনিই আল্লাহ, তিনিই এক। " ' (১১২.১) তারা যখন (যুদ্ধ থেকে) ফিরেছিলেন, সাহাবিরা রাসূলের কাছে তাঁর কুরআন পাঠের কথা উল্লেখ করেছিল। তিনি (তাদের) বললেন, "তাকে জিজ্ঞাসা করুন তিনি কেন এমনটি করেন?" তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল এবং তিনি বলেছিলেন, "আমি এটি করি কারণ এতে করুণাময়ের গুণাবলীর উল্লেখ রয়েছে এবং আমি এটি (আমার প্রার্থনায়) আবৃত্তি করতে ভালবাসি।" নবী (তাদের) বললেন, "তাকে বলুন যে আল্লাহ তাকে ভালবাসেন"।[১৫]
- ইমাম মালিক ইবনে আনাস, উবাইদ ইবনে হুনায়েন থেকে লিপিবদ্ধ করেছেন যে তিনি আবু হুরায়রাহকে বলতে শুনেছেন যে, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বাইরে গিয়েছিলাম এবং তিনি একজন লোককে আবৃত্তি করতে শুনেছিলেন - বলুন: তিনিই একমাত্র আল্লাহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘এটা ফরজ’ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, 'ফরজ কী?' তিনি জবাব দিলেন, "জান্নাত"।[২]
- আবু সাইদ বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের বললেন, তোমাদের মধ্যে কারও পক্ষে একরাতের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ কোরআন তিলাওয়াত করা কি কঠিন? তারা বলেছিলেন, হে আল্লাহর রসূল, আমাদের মধ্যে এমন কাজ করার ক্ষমতা কার? আল্লাহ প্রেরিত রাসূল জবাব দিয়েছিলেন: "আল্লাহ এক। তিনি অমুখাপেক্ষী... ' (সূরা আল-ইখলাস ১১২.১ .. শেষ অবধি) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।[১৬][১৭]
- আল বুখারী, আমরাহ বিনতে আবদুর রহমান (যিনি নবীজীর স্ত্রী আয়েশার নিকটেই থাকতেন) থেকে বর্ণনা করেন, আয়েশা বলেছিলেন, "নবী একজন লোককে যুদ্ধ অভিযানের নেতা হিসাবে প্রেরণ করেছিলেন এবং তিনি (ঐ নেতা) সৈনিকদের নামাযে নেতৃত্ব দিতেন (ইমামতি করতেন)। নামাযে সাহাবীগণ এবং তিনি (কিরাতে) বলতেন: 'তিনিই আল্লাহ এক...' (১১২:১)। অতঃপর তারা ফিরে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তা (এ ঘটনা) উল্লেখ করেন এবং রাসূল বলেন, "তাকে (নেতা) জিজ্ঞাসা করুন কেন তিনি তা করেন"। তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন এবং তিনি বললেন, কারণ এটি দয়াময়ের (আল্লাহর) বর্ণনা এবং আমি তা আবৃত্তি করতে ভালবাসি। নবীজী (উত্তর শুনে) বললেন, তাকে জানিয়ে দাও যে, মহান আল্লাহ তাকে ভালবাসেন।[২] ইমাম বুখারি হাদিসটি তার গ্রন্থে স্থান দিয়েছেন। নাসাঈ এবং মুসলিম শরীফেও হাদিসটি রয়েছে।
- একটি বিশুদ্ধ হাদীসে বলা হয়েছে 'সকাল-সন্ধ্যায় সূরা আল-ইখলাস এবং আল-মু‘আওয়িদ্বাতান (সূরা আল-ফালাক ও সূরা আন-নাস) তিনবার আবৃত্তি করুন; তারা আপনাকে সবকিছু থেকে রক্ষা করবে। ' [আত-তিরমিযী] মুহাম্মদ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী হাদিসটির সত্যতা আঠাশ-ঊনত্রিশ বলে মন্তব্য করেছেন।[১৮]
- আয়েশা থেকে বর্ণিত, "নবী যখনই প্রতি রাতে বিছানায় যেতেন, তখন তিনি একসাথে তার হাত দুটো রাখতেন এবং সূরা ইখলাস, সূরা আল-ফালাক ও সূরা নাস পড়ার পর তার গায়ে বুলিয়ে দিতেন এবং মাথা থেকে শুরু করে তার শরীরের ওপর ঘষতেন। যা তিনি তিনবার করতেন।[১৯][২০]
- ইমাম আহমাদ বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে উমর বলেছেন, আমি নবীকে সকালে ও সূর্যাস্তের পরে তেলাওয়াত করতে দেখেছি, বলুন: "হে কাফেরগণ! "'(সূরা কাফেরুন) এবং বলুন: "তিনিই আল্লাহ এক।"[২]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ জর্জ সেল কর্তৃক অনুদিত কুরআন
- ↑ খ গ ঘ ঙ চ কইবনে কাসির। "Tafsir Ibn Kathir (English): Surah Al Akhlas [তাফসির ইবনে কাসির (ইংরেজি): সূরা আল ইখলাস]"। Quran 4 U। তাফসির। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯।
- ↑ ১৬৯৮ সালে কুরআন অনুবাদক ইতালীয় পণ্ডিত ‘লুডোভিকো মরক্কী’ কর্তৃক অনুদিত কুরআন আলোকপাত করে যে, কুরআনের কয়েকটি অধ্যায় বা সূরার দুটি বা তার বেশি শিরোনাম রয়েছে, যা আরবি ভাষায় বিভিন্ন অনুলিপিগুলির উপস্থিতি দ্বারা উপলভ্য।
- ↑ আরবি লিপি ইউনিকোড। কুরআনের আয়াত নির্দেশক, ইউ+০৬ডিডি, পৃষ্ঠা ৩, প্রতীক অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব
- ↑ সেল, জর্জ। Alkoran of Mohammed [মুহাম্মাদের আল-কুরআন]।
- ↑ সেল, জর্জ (টীকা: কুরআন:১১৩)। Alkoran of Mohammed [মুহাম্মাদের আল-কুরআন]। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Wherry, Elwood Morris (১৮৯৬)। A Complete Index to Sale's Text, Preliminary Discourse, and Notes। London: Kegan Paul, Trench, Trubner, and Co। এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে।
- ↑ Nigosian, S.A. (২০০৪)। Islam: Its History, Teaching, and Practices [ইসলাম: ইতিহাস, শিক্ষা ও অনুশীলন]। Indiana University Press [ইনডিয়ানা ইউনিভার্সিটি প্রেস]। পৃষ্ঠা ৭০। আইএসবিএন 978-0-253-21627-4।
- ↑ তাঁর মতো আর কেউ নেই – সূরা ইখলাস
- ↑ তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন (১১ খন্ডের সংহ্মিপ্ত ব্যাখ্যা)।
- ↑ A.T. Welch, art. ‘al-Ḳur’ān’ in Encyclopaedia of Islam, 2nd edn. On early development of sura headings see Adam Gacek, Arabic Manuscripts: A Vademecum For Readers, Handbook of Oriental Studies (Leiden/Boston: Brill, 2009), pp. 219–20.
- ↑ Translation of Sahih Bukhari, Book 93: Oneness, Uniqueness of Allah (Tawheed) Volume 9, Number 471
- ↑ ONENESS, UNIQUENESS OF ALLAH (TAWHEED)
- ↑ Imam Malik's Muwatta Chapter No: 15, The Quran Hadith no: 19
- ↑ Translation of Sahih Bukhari, Book 93: Oneness, Uniqueness of Allah (Tawheed) Volume 9, Number 472
- ↑ sahih bukhari: book of 'virtue of quran'
- ↑ Translation of Sahih Bukhari, Book 61: Virtues of the Qur'an Book 61, Number 534
- ↑ "Archived copy" (PDF)। ২০১১-১০-১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-১৮।
- ↑ (Sahih al-Bukhari Vol.6 Bk.6 No.536)
- ↑ Translation of Sahih Bukhari, Book 71: Medicine Volume 7, Number 644