-->

শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২

সূরা ইখলাস

সূরা ইখলাস

 

সূরা ইখলাস


আল ইখলাস
الإخلاص
Surat Al-Ikhlas - Magharibi script.jpg
শ্রেণীমক্কী সূরা
নামের অর্থএকনিষ্ঠতা
অন্য নামনিরঙ্কুশতা, একত্ববাদ, আল্লাহর এককত্ব, একনিষ্ঠ ধর্মপালন, আল্লাহর পরিপূর্ণতার ঘোষণা
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রম১১২
আয়াতের সংখ্যা
পারার ক্রম৩০
রুকুর সংখ্যা
সিজদাহ্‌র সংখ্যা
শব্দের সংখ্যা১৫
অক্ষরের সংখ্যা৪৭
← পূর্ববর্তী সূরাসূরা লাহাব
পরবর্তী সূরা →সূরা ফালাক
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ [[চিত্র:|center|]]

স্রষ্টার একত্ববাদের ঘোষণা [১] বা একনিষ্ঠতা (Arabic: الْإِخْلَاص, আল-ইখলাস ) [২] বা একত্ববাদ (আরবিالتوحيد‎‎, আত-তাওহীদ),[৩] যা সাধারণত সূরা আল-ইখলাস নামে পরিচিত, হলো কুরআনের ১১২ তম অনুচ্ছেদ (সূরা)।

۝ [৪] বলুন (হে নবি),আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়;
۝ আল্লাহ অমুখাপেক্ষী;
۝ তিনি কাউকে জন্ম দেননি,কেউ তাঁকে জন্ম দেননি;
۝ আর কেউই তার সমতুল্য নয়।[৫]

কুরআন অনুবাদের জন্য পরিচিত ব্রিটিশ প্রাচ্যবিদ পণ্ডিত এবং আইনজীবী জর্জ সেল এর মতে, এই সূরাটি মুসলমানরা বিশেষভাবে অনুশীলন করেন এবং ইসলামিক ঐতিহ্য সূরাটিকে পুরো কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান বলে ঘোষণা করে। বলা হয় যে, সূরা ইখলাস (নবুয়ত লাভের পর) মুহাম্মাদ ও কুরাইশ পৌত্তলিকদের দ্বন্দ্ব চলাকালীন মুহাম্মদের সাথে স্রষ্টার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়েছিল।[৬]

আল-ইখলাস কেবল এই সূরার নামই নয়, এর বিষয়বস্তুর শিরোনামও, কারণ এটি একমাত্র তাওহীদের সাথে সম্পর্কিত। কুরআনের অন্যান্য সূরাগুলো সাধারণত তাদের মধ্যের একটি শব্দের নামে নামকরণ করা হয়েছে। তবে এই সূরাতে ইখলাস শব্দটি কোথাও পাওয়া যায় না। অর্থাৎ, এর অর্থ এবং বিষয় বিবেচনায় রেখে এ নাম দেওয়া হয়েছে।

সার সংক্ষেপ[সম্পাদনা]

আবৃত্তি ও স্মৃতিতে সংরক্ষণ[সম্পাদনা]

মুসলমানগণ পুণ্যের কাজ হিসেবে কুরআন সম্পূর্ণভাবে বা এর অংশবিশেষ আবৃত্তি এবং মুখস্থ করে থাকেন। শুদ্ধভাবে (তাজবিদ অনুসারে) কুরআন পাঠ করাকে একটি অতুলনীয় ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়।[৮]

অবতরণের পটভূমি[সম্পাদনা]

মুশরিকরা হযরত মুহাম্মদ (স:) - কে আল্লাহ্‌ তা'আলার বংশ পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল , যার জওয়াবে এই সূরা নাযিল হয়। অন্য এক বিবরণে আছে যে , মদীনার ইহুদিরা এ প্রশ্ন করেছিল। আবার কোনো কোনো বর্ণনায় রয়েছে যে , তারা আরও প্রশ্ন করেছিল- "আল্লাহ্‌ তা'আলা কিসের তৈরি ? স্বর্ণ-রৌপ্য নাকি অন্য কিছুর?" এর জওয়াবে সূরাটি অবতীর্ণ হয়েছে ৷[৯][১০]

পাণ্ডলিপি ও অনুবাদ[সম্পাদনা]

পাঠ ও লিপি[সম্পাদনা]

بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
قُلْ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ ۝
1 ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ
ٱللَّهُ ٱلصَّمَدُ ۝
2 আল্লাহুস সামাদ
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ۝
3 লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ
وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌۢ ۝
4 ওয়ালাম ইয়াকুল লাহু কুফুওয়ান আহাদ


بِسۡمِ اِ۬للَّهِ اِ۬لرَّحۡمَٰنِ اِ۬لرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
قُلۡ هُوَ ا۬للَّهُ اَحَدٌ ۝
1 ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ্
اَ۬للَّهُ اَ۬لصَّمَدُ ۝
2 আল্লাহুস্ সামাদ্
لَمۡ يَلِدۡ وَلَمۡ يُولَدۡ ۝
3 লাম্ ইয়ালিদ্ ওয়ালাম্ ইউলাদ্
وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ كُفُؤًا اَحَدٌۢ ۝
4 ওয়ালাম্ ইয়াকুল্লাহু কুফুআন আহাদ

বাংলা অনুবাদ[সম্পাদনা]

1 বলুন ( হে নবি ), তিনি আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় ,
2 তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন ,
3 তিনি কাউকে জন্ম দেননি ; কেউ তাঁকে জন্ম দেননি ,
4 আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই ।
অনুবাদ:মীর ফজলে আলী


ব্যাখ্যা[সম্পাদনা]

ইসলামের প্রারম্ভিক বছরগুলোতে কুরআনের কিছু সূরা বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল, কখনও কখনও অঞ্চল অনুসারে বিভিন্ন সূরা বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল।[১১] এই সূরাটি সেগুলোর মধ্যে একটি। সূরাটি তাওহীদের একটি সংক্ষিপ্ত ঘোষণা, আল্লাহর একত্ববাদ সমন্বিত চারটি আয়াত। আল-ইখলাস অর্থ "বিশুদ্ধতা" বা "একনিষ্ঠতা"।

এটি মক্কায় নাকি মদিনায় অবতীর্ণ তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।তবে সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হওয়ার তথ্যই সম্ভাব্য এবং যুক্তিযুক্ত, বিশেষত যেহেতু এটি আবিসিনিয়ার বিলাল দ্বারা প্রমাণিত হয়, যিনি তাঁর নিষ্ঠুর কর্তা দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছিলেন এবং "আহাদ, আহাদ!" [(আল্লাহ) একক, একক!] বারবার বলছিলেন। উবাই ইবনে কা’ব হতে বর্ণিত যে, সূরাটি অবতীর্ণ হয় মুশরিকদের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে: "হে মুহাম্মাদ! তোমার প্রতিপালকের বংশপরিচয় আমাদেরকে বল।"

কুরআন ১১২:১-২ স্রষ্টার একত্ববাদ[সম্পাদনা]

সূরা আল ইখলাসে চারটি আয়াত রয়েছে:

১১২:১. বলুন: তিনি আল্লাহ, (যিনি) একক। ১১২:২. আল্লাহ আস-সামাদ (অমুখাপেক্ষী)। ১১২:৩. না তিনি কাউকে জন্ম দিয়েছেন, না তিনি জন্ম নিয়েছেন। ১১২:৪. এবং কেউই তার সমতুল্য নয়।[২]

এ বিষয়ে "তাফসির ইবনে কাসির" এ বলা হয়েছে,

যখন ইহুদিরা বলে, ‘আমরা আল্লাহর পুত্র উযায়েরকে উপাসনা করি’ এবং খ্রিস্টানরা বলে, ‘আমরা আল্লাহর পুত্র মাসীহ (ঈসা) এর উপাসনা করি’ এবং জুরোস্ত্রীরা বলে, ‘আমরা সূর্য ও চাঁদের উপাসনা করি’ এবং মুশরিকরা বলে ‘আমরা মূর্তিপূজা করি,' আল্লাহ তার রাসূলের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন, "বলুনঃ তিনিই আল্লাহ এক। তিনিই এক, একক, তার কোন সমকক্ষ নেই, কোন সহকারী নেই, প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, সমান এবং তার তুলনাও নেই।"[২]

এই শব্দটি (আল-আহাদ) পরাক্রমশালী আল্লাহ ছাড়া আর কারও পক্ষে ব্যবহার করা যাবে না, কারণ তিনি (আল্লাহ) তার সমস্ত গুণাবলীতে ও কর্মে নিখুঁত।

হাদিস[সম্পাদনা]

হাদিস অনুসারে এ সূরাটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সূরা ইখলাস কুরআনের একটি সম্মানীত অংশ:

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1.  জর্জ সেল কর্তৃক অনুদিত কুরআন
  2. ↑ ঝাঁপ দিন:      ইবনে কাসির। "Tafsir Ibn Kathir (English): Surah Al Akhlas [তাফসির ইবনে কাসির (ইংরেজি): সূরা আল ইখলাস]"। Quran 4 U। তাফসির। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
  3.  ১৬৯৮ সালে কুরআন অনুবাদক ইতালীয় পণ্ডিত ‘লুডোভিকো মরক্কী’ কর্তৃক অনুদিত কুরআন আলোকপাত করে যে, কুরআনের কয়েকটি অধ্যায় বা সূরার দুটি বা তার বেশি শিরোনাম রয়েছে, যা আরবি ভাষায় বিভিন্ন অনুলিপিগুলির উপস্থিতি দ্বারা উপলভ্য।
  4.  আরবি লিপি ইউনিকোড। কুরআনের আয়াত নির্দেশক, ইউ+০৬ডিডি, পৃষ্ঠা ৩, প্রতীক অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব
  5.  সেল, জর্জ। Alkoran of Mohammed [মুহাম্মাদের আল-কুরআন]
  6.  সেল, জর্জ (টীকা: কুরআন:১১৩)। Alkoran of Mohammed [মুহাম্মাদের আল-কুরআন] এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7.  Wherry, Elwood Morris (১৮৯৬)। A Complete Index to Sale's Text, Preliminary Discourse, and Notes। London: Kegan Paul, Trench, Trubner, and Co।  এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে।
  8.  Nigosian, S.A. (২০০৪)। Islam: Its History, Teaching, and Practices [ইসলাম: ইতিহাস, শিক্ষা ও অনুশীলন]। Indiana University Press [ইনডিয়ানা ইউনিভার্সিটি প্রেস]। পৃষ্ঠা ৭০। আইএসবিএন 978-0-253-21627-4
  9.  তাঁর মতো আর কেউ নেই – সূরা ইখলাস
  10.  তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন (১১ খন্ডের সংহ্মিপ্ত ব্যাখ্যা)।
  11.  A.T. Welch, art. ‘al-Ḳur’ān’ in Encyclopaedia of Islam, 2nd edn. On early development of sura headings see Adam Gacek, Arabic Manuscripts: A Vademecum For Readers, Handbook of Oriental Studies (Leiden/Boston: Brill, 2009), pp. 219–20.
  12.  Translation of Sahih Bukhari, Book 93: Oneness, Uniqueness of Allah (Tawheed) Volume 9, Number 471
  13.  ONENESS, UNIQUENESS OF ALLAH (TAWHEED)
  14.  Imam Malik's Muwatta Chapter No: 15, The Quran Hadith no: 19
  15.  Translation of Sahih Bukhari, Book 93: Oneness, Uniqueness of Allah (Tawheed) Volume 9, Number 472
  16.  sahih bukhari: book of 'virtue of quran'
  17.  Translation of Sahih Bukhari, Book 61: Virtues of the Qur'an Book 61, Number 534
  18.  "Archived copy" (PDF)। ২০১১-১০-১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-১৮
  19.  (Sahih al-Bukhari Vol.6 Bk.6 No.536)
  20.  Translation of Sahih Bukhari, Book 71: Medicine Volume 7, Number 644